ই-জোনের ব্যাংকের ভাইভা অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। আমার ভাইভা ছিলো ৫টার স্লটে কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় আমাকে এদিক সেদিক ঘুরিয়ে ভাইভা দিলো শেষের দিকে।আর এদিকে ভাইভা বোর্ডের লোকজন প্রায় চলেই গেছিলো। যাইহোক অনেক পরে ভাইভার ডাক পেলাম।
ই-জোনের ব্যাংক ভাইভা অভিজ্ঞতা ২০২৩
আমি: স্যার আসতে পারি?
স্যার:আসেন
ঢুকে সালাম দিলাম
১ম জন:বসেন
আমি:ধন্যবাদ স্যার
১ম জন:কি বললেন?
আমি :ধন্যবাদ স্যার।
১ম জন:ওহ আচ্ছা, আপনাকেও ধন্যবাদ।
২য় জন আমার এলাকার নাম ঠিকানা ও দূরত্ব সম্পর্কে জানলেন।
আমি সকল উত্তর দিলাম ব্যাখ্যাসহ।
২য় জন: আপনার পরিবারে কে কে আছে?
আমি: স্যার আমি, আমার মা,আমার স্ত্রী আর ছোট্ট একটা মেয়ে।
২য়জন অবাক হয়ে উত্তর দিলেন ওরে বাবা আপনি ২৩ বছরেই বিয়ে করে ফেলছেন?
আমি: স্যার আমার পরিবার সম্মতি ও আমার পছন্দ ছিলো তাই বিয়েটাসেরে ফেলেছি।
২য় জন: কবে বিয়ে করেছেন?
আমি :বিবাহের তারিখসহ বললাম।
২য় জন: তাই বলে এতো তাড়াতাড়ি?
আমি: স্যার জীবনে সব জায়গায় পিছিয়ে থাকতে চাই না।
১ম জন: তাই আপনি বিয়ে করে জীবনের এইদিকে এগিয়ে গেলেন(হেসে হেসে উত্তর বললেন)।
আমি: জ্বী স্যার।
২য় জন: তো আপনি এখন কী করছেন?
আমি: কিছু না স্যার।জবের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি।
২য় জন: তো আপনার সংসার চলে কিভাবে?
আমি: পারিবারিক ও বাবার রেখে যাওয়া জমি চাষাবাদ করে।
১ম জন:আপনার বাবা কী করেন?
আমি:স্যার আমার বাবা ২০১৪ সালে গত হয়েছেন।
২য় জন:আগে কী করতেন?
আমি: স্যার টিউশনি আর কোচিং করাতাম।
৩য় জন: কত পেতেন?(উনি ই-জোনের এবং প্রশ্নও কম করেছেন)
আমি: ১৫/২০ হাজারের মত।
১ম জন: এখন কিছু করেন না কেন?
আমি: স্যার ছাত্ররা পাশ করেছে তাই টিউশনি ও কোচিং শেষ হয়েছে।
২য় জন: আচ্ছা আপনি কোন পদে যেতে চান?
আমি ভাবছিলাম কী বলবো।
তিনি আবার বললেন ব্যাংক দুটো অপশন দিয়েছে আমরা জানি। আপনি আপনার মনের কথা বলেন।
আমি: স্যার কাস্টমার সার্ভিস অফিসারে যেতে চায়।
৩য় জন: ক্যাশে কেন যেতে চান না?
আমি: স্যার ক্যাশে একটু ঝুঁকি আছে।
২য় জন: আপনি তো অলরেডি বিয়ে করেই ঝুঁকির মধ্যেই আছেন।আপনার তো একটা চাকুরী ফরজ(হেসে হেসে বলছিলেন)
আমি: জ্বী স্যার যেটাই হবে সেটাই করবো।
৩য় জন: আপনাকে ক্যাশে দেই আপনি ক্যাশে করেন।
আমি:স্যার দিলে তো অবশ্যই করবো।
২য় জন: আপনাকে যদি খাগড়াছড়ি দেয় আপনি কী মা,বউ বাচ্চা নিয়ে চলে যাবেন?
আমি:জ্বী স্যার অবশ্যই যাবো।
২য় জন আমার ফাইলের উপর কাস্টমার সার্ভিস লিখে আন্ডার লাইন করলেন আর বললেন আপনাকে ক্যাশে দেয়।
আমি: জ্বী স্যার দিলে অবশ্যই করবো। মনে হচ্ছিলো তারা জোর করেই আমাকে ক্যাশে দিয়ে দেয়।
আরো অনেক কথা হয়েছে সেগুলো আর বললাম না।
সবশেষে হাসতে হাসতে বললেন আপনি এখন যান।
আমি সালাম দিয়ে চলে আসলাম।
এখন কী হয় সেটাই দেখার অপেক্ষা।
তারা খুব বন্ধুসুলভ ছিলেন আমি তাদের বিরক্তভাব আমার উত্তরে দূর করতে পেরেছিলাম বলে মনে হয়।আর এতো ফানি ও বন্ধুসুলভ ভাইভা আগে দেয়নি।
আমার ভাইভা ছিল ১২ টায়। প্রথমে সময় মত উপস্থিত ছিলাম। ১২ টার কিছুক্ষণ পর একটা এটেনডেন্স খাতা দিল স্বাক্ষর করা জন্য। স্বাক্ষর করে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করলাম। তারপর যে কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেছে সেগুলো নিয়ে একটা ফাইল করে তাদের কাছে রেখে দিবে। তারপর কম্পিউটার টেস্টের জন্য একটা রুমে নিয়ে যাবে।
কম্পিউটার টেস্ট যা যা ছিল:
♦(ms word)
১.একটা লাইন দেয়া থাকবে সেটা time new roman front এ কনভার্ট করতে হবে।
২.একটা লাইনকে central alignment করতে হবে।
৩. একটা ছোট প্যারাকে সিরিয়ালি ১.২.৩. এভাবে সাজাতে হবে।
♦(excell)
১. এভারেজ বের করতে হবে।
২.যোগ করতে হবে।
এগুলোর জন্য মোট ১০ মিনিট সময় পাবেন।
এর পর আবার ভাইভার জন্য অপেক্ষা করবেন।
অনুমতি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলাম।
সালাম দিলাম। তারা বসতে বলল।
পরীক্ষক: নাম কি
আমি: উত্তর করলাম।
পরীক্ষক: বাসা কোথায়?.
আমি: উত্তর করলাম।
পরীক্ষক:পড়ালেখা করেছেন কোথা থেকে?
আমি: উত্তর করলাম
পরীক্ষক:ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
আমি: উত্তর করলাম
পরীক্ষক:এই বিষয় নিয়ে কেন পড়েছেন? এই প্রশ্ন থেকে আরো কয়েকটি প্রশ্ন করেছে, অনেক পেচাইছে।
আমি: উত্তর করলাম।
পরীক্ষক: এতোদিন কি করেছেন?
আমি:উত্তর করলাম
পরীক্ষক:ক্যাশে হলে জব করবেন?
আমি: উত্তর করলাম
পরীক্ষক:মার্কেটিং এ জব করবেন?
আমি উত্তর করলাম।
পরীক্ষক: NPL (None performing loan) কি?
আমি: প্রথমে NPV (Net present value) ভেবে উত্তর দিয়েছিলাম। পরে উনি (৩ জনের একজন) কারেকশন করে দিয়েছে।
পরীক্ষক: আমি এখন আসতে পারেন। আমরা আপনাকে জানাব।
আমি: সালাম দিয়ে বের হয়ে এসেছি।