প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজ

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ চলে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ততটা আগ্রহ না থাকলেও এই কলেজগুলোকে নিজেদের অধীনে নেওয়ার জন্য বেশি আগ্রহী ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ।
 
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেসনজটসহ নানা অসুবিধার কথা চিন্তা করে সরকারি কলেজগুলোকে আঞ্চলিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়ার অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর অনুশাসন বাস্তবায়নের জন্য বেশ কয়েকবার তাগিদপত্র দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
 
এক পর্যায়ে ২০১৬ সালের নভেম্বরে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রথম ধাপে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাতটি সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনস্থ করার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। পরে এ নিয়ে কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয় সাতটি সরকারি কলেজ।
ওই সময়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অধিভুক্ত কলেজ আমাদের জন্য নতুন নয়। আগেও এই কলেজগুলো আমাদের অধীনে ছিল। ফলে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা সবকিছুই ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার চেষ্টা করছি। যাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা বাকি আছে শিগগির আমরা তা নেওয়ার চেষ্টা করব। আর নতুন পরীক্ষার তারিখও দ্রুত ঘোষণা করা হবে।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নতুন কলেজগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৩৬ জন শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ১৪৯ জন শিক্ষক রয়েছেন।
 
তথ্য অনুযায়ী, সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে গেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় কমে যাবে, কমে যাবে প্রভাব- ইত্যাদির কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে হাতছাড়া করতে চায়নি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫ সালের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়েছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই, ৩ জানুয়ারি। শেষ হয় গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ব্যবহারিক শুরুর আগেই কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যায়। পরে ২০১৬ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষার সময়সূচিও ঘোষণা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তহীনতায় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এখনো পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি এফেলিয়েটেড বিশ্ববিদ্যালয়। গাজীপুর জেলার বোর্ডবাজারে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে কলেজগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হিসেবে ছিল।
 
সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক 

About Sydur Rahman Tanvir

Check Also

সাত কলেজ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২০-২০২১

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কী সাত কলেজে মাস্টার্স করা যায়?

ইতিমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ফাইনাল ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। অনেকে জানতে চেয়েছেন জাতীয় …