ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের “ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক ” পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। আমি ধারাবাহিকভাবে এই পদের সুযোগ সুবিধা ও পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বর্তমান পদসোপান হল :
১। ঔষধ পরিদর্শক (১০ম গ্রেড)
২। ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক (৯ম গ্রেড)
৩। সহকারী পরিচালক (৬ষ্ঠ গ্রেড)
৪। উপ পরিচালক (৫ম গ্রেড)
৫। পরিচালক (৩য় গ্রেড)
৬। অতিরিক্ত মহাপরিচালক
৭। মহাপরিচালক
“ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক ” পদটি একটি প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড পদ। এর পরীক্ষা নিবে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।
প্রমোশন স্কুপ :
উপরের দিকে প্রমোশনের স্কুপ ভালো। আপনি গ্রেড -৩ পর্যন্ত পদোন্নতি পেতে পারেন। এটি একটি টেকনিক্যাল পোস্ট। তাই বাইরে থেকে পদায়ন হয় না। গত মাসেও আমাদের ৬ জন স্যার পদোন্নতি পেয়ে পরিচালক হয়েছেন।
পোস্টিং : হেড অফিস, ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি, সেন্ট্রাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরি, জেলা কার্যালয়ে পোস্টিং হতে পারে।
কাজ : দেশের ঔষধ সেক্টর দেখার দায়িত্ব এই প্রতিষ্ঠানের। ঔষধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান গুলোকে লাইসেন্স প্রদান, পদ অনুমোদন, রেসিপি অনুমোদন, কাচামাল আমদানির ব্লকলিস্ট প্রদান, ঔষধ বিক্রয় কারী প্রতিষ্ঠান গুলোর নিয়ন্ত্রণ সহ অনেক ধরনের কাজ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। আপনি জেলায় পোস্টিং পেলে ঐ জেলায় অবস্থিত ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সহ জেলার সকল ঔষধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করার দায়িত্ব আপনার থাকবে। এখানে কাজ করতে গেলে আপনার জেলা প্রশাসন, পুলিশ, সিভিল সার্জন অফিসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ থাকবে। বর্তমানে সব জেলার DDO পদটি সহকারী পরিচালকের হলেও অনেক জেলায় ঔষধ তত্ত্বাবধায়কগণ DDO ‘র দায়িত্ব পালন করছেন। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গেলে অনেক সম্মান যেমন পাওয়া যায় তেমন অনেক চ্যালেঞ্জের ও মুখোমুখি হতে হয়।
পরীক্ষা পদ্ধতি :
মোট তিন ধাপে পরীক্ষা হবে (প্রীলি, রিটেন ও ভাইভা) । রিটেন ও ভাইবার নম্বর সমন্বয় করে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হবে। প্রীলি পরীক্ষার মাধ্যমে লিখিত ‘র জন্য প্রার্থী বাছাই করা হবে। পিএসসি সাধারণত লিখিত পরীক্ষার জন্য পদের ৭-১০ গুণ প্রার্থী নির্বাচিত করে। এক্ষেত্রে যেহেতু ৫৭ টি পদ তাই কমবেশি ৫০০ জনের মত প্রীলি পাশ করবে। মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা (১ ঘন্টা)। পরীক্ষায় ৪ টি অংশ থেকে প্রশ্ন হবে।
১। বাংলা – ২০
২। ইংরেজি – ২০
৩। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী -২০
৪। টেকনিক্যাল -৪০ (ফার্মেসি, কেমিস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি)
নন টেকনিক্যাল ৬০ এর প্রশ্ন বিসিএস এর মত হবে।
সাজেশন : জব সলিউশন থেকে ১০-৪৩ বিসিএস এর সকল প্রশ্ন ব্যাখ্যা সহ + নন ক্যাডার ২০১৬-২০২১ পর্যন্ত সব প্রশ্ন (শুধু পিএসসি কতৃক নেওয়া পরীক্ষা গুলো)। এই প্রশ্নগুলো সলভ করে গেলে আশা করি ভালো করা যাবে, পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি ‘র বেসিক এ দক্ষতা লাগবে। সাম্প্রতিক থেকেও কিছু প্রশ্ন থাকতে পারে।
টেকনিক্যাল ৪০ : এই পদে শুধু ফার্মেসি, বায়োকেমিস্ট্রি, কেমিস্ট্রি ও এপ্লাইড কেমিস্ট্রি ‘র স্টুডেন্ট রা আবেদন করতে পারে। এই বিষয়গুলোর বেসিক থেকে প্রশ্ন হতে পারে। অজৈব রসায়ন, ভৌত রসায়ন, জৈব রসায়ন এর বেসিক গুলো দেখে যেতে পারেন। অনার্সে পড়া ফার্মাকোলজি কোর্সটির বেসিক মেটেরিয়াল গুলো ও দেখা যেতে পারে।
কাট মার্ক : প্রীলি পরীক্ষার নির্দিষ্ট পাশ মার্ক নেই। আছে কাট মার্ক যা কেউ জানেনা। এটা মোটামুটি বলা যায় প্রথম ৫০০ জনের মধ্যে থাকলে রিটেন দেওয়া যাবে। তাই সর্বোচ্চ ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতি ২ টা ভূল উত্তরের জন্য ১ মার্ক চলে যাবে। তাই নেগেটিভ মার্কিং এর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
পরিশেষে, পরীক্ষা টি যেহেতু বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন নিবে তাই নিশ্চিন্তে বলা যায় সম্পুর্ন মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। ভালভাবে প্রস্তুতি নিন, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ঔষধ প্রশাসনে নিয়োগপ্রাপ্ত হউন। ঔষধ সেক্টরে কাজ করে পাবলিক হেলথে অবদান রাখার সুযোগ গ্রহণ করুন।
ইফ্রাহিম ইকবাল চৌধুরী
ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক
ঔষধ প্রশাসন, ভোলা