গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও কিছু কথাঃ
সম্প্রতি গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে চাকরি প্রার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে তুমুল আলোচনা- সমালোচনা চলছে, বিভিন্নজন না জেনে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নিজের কর্মস্থলের অভিজ্ঞতা থেকে আজ কিছু লেখার প্রচেষ্টা….
গ্রামীণ ব্যাংকে আবেদন পদ্ধতিঃ Grameen Bank Apply
গ্রামীণ ব্যাংক একটি অ-তফসিলি ব্যাংক। এর কার্যক্রম অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে অনেকটাই আলাদা ও ভিন্ন। এটি সম্পূর্ণ নিজস্ব স্বাধীন পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।
নিয়োগ প্রক্রিয়াঃ-
গ্রামীণ ব্যাংকে সাধারণত ২টা পদে সরাসরি নিয়োগ প্রদান করা হয় –
১. প্রশিক্ষণার্থী কেন্দ্র ব্যবস্থাপক
যোগ্যতা- ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান। যারা ফিল্ড পর্যায়ে কালেকশনের সাথে জড়িত।
২. প্রশিক্ষণার্থী অফিসার
যোগ্যতা – ন্যূনতম স্নাতক বা স্নাতকোত্তর।
আমি আলোচনা করবো এই পদের কাজ, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি নিয়ে……
প্রশিক্ষণার্থী অফিসার – পদটি গ্রামীণ ব্যাংকে এন্ট্রি লেভেলের সর্বোচ্চ পদ। এখানে সরাসরি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস আবেদনধারী নিয়োগ পেয়ে থাকে। তবে এবার আবেদনের যোগ্যতা শুধু অনার্স পর্যন্ত শিথিল করলেও বেশ কিছু সাবজেক্ট মেনশন করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সার্কুলারে মেনশন করা বিষয় হতে শুধু অনার্স পাস করলেই আপনি আবেদন করতে পারবেন।
নিয়োগ পদ্ধতিঃ-
এবারের নিয়োগ পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে এটা খুব ভালোভাবেই অনুমান করা যায়। কারণ, অনলাইনে লাখ লাখ আবেদন জমা পড়বে। আগে গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কেবল হেড অফিসে ভিন্ন ভিন্ন তারিখে অনুষ্ঠিত হতো, এবার ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পরীক্ষা পদ্ধতি – আগে একইদিনে এমসিকিউ+ লিখিত + মৌখিক পরীক্ষা নিতো। যারা এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতো কেবল তারাই পরবর্তী ঘন্টায় লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতো। তবে এবারের নিয়োগ পরীক্ষায় অনেকটাই ভিন্নতা আসবে।
সিলেকশন ও জয়েনিং —-
যারা পরীক্ষায় চুড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হবে সেখান থেকে কতৃপক্ষ একটা তালিকা তৈরি করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ধাপে ধাপে যোগদান হবে। অবশ্যই অবশ্যই প্যানেল লিস্ট হবে এবং সে লিস্ট থেকে কতৃপক্ষ যেকোনো সময় জয়েনিং এর জন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করবে + যোগদানপত্র পাঠানো হবে।
দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধাঃ-
যোগদানের পর দীর্ঘ ১বছর আপনাকে একটা প্রশিক্ষণ পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এই সময়টাতে আপনাকে একটু ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে, যারা এই সময়টা ভালোভাবে পার করতে পারবে তারাই আগামী দিনের গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি…..!!
প্রশিক্ষণ নিয়ে আরেকটু বিস্তারিত বলি –
হেড অফিসে যোগদানের পর কয়েকদিন ওখানে প্রশিক্ষণ ক্লাস চলবে, (প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে থাকা-খাওয়া ফ্রি) তারপর প্রশিক্ষণের জন্য একটা শাখায় সাময়িক পোস্টিং দিবে, যার মেয়াদ হবে ১/১.৫ মাস। তারপর হেড অফিসে ফিরে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আবারো কয়েকদিন ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ফাইনালি আপনাকে একটা যোনাল অফিসে পোস্টিং দিবে, যোনাল অফিস আপনাকে একটা শাখায় স্থায়ী পোস্টিং দিবে। পোস্টিংপ্রাপ্ত শাখায় যোগদান করার পর আপনি ঐ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন।
তখনই নতুন পদবী ধারণ করবে,
প্রশিক্ষণার্থী অফিসার + শাখা ব্যবস্থাপক
এরপর যোগদানের তারিখ থেকে ১ বছর পূর্ণ হওয়ার পরে যোনাল অফিসে একটা চূড়ান্ত পরীক্ষা নিবে। এটা নামে যতো চূড়ান্ত, কাজে ততো চূড়ান্ত না….!
এই পরীক্ষা নিয়ে ভয়/টেনশনের কিছু নেই। আপনি ১বছর যা কাজ করছেন ঐ সংক্রান্ত পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ার কোনো রেকর্ড নেই, যদি আপনি নিজে উত্তীর্ণ হতে না চান….!
সুযোগ সুবিধার কথা বলতে গেলে…. ১বছর প্রশিক্ষণ পিরিয়ডে আপনাকে ১ম ৫মাস ১১০০০+ ১৩০০ (যাতায়াত ভাতা) + মোবাইল ভাতা দিবে। পরবর্তী ৭মাস ১২০০০+ ১৩০০+ মোবাইল ভাতা দিবে। এছাড়া আপনি একজন শাখা ব্যবস্থাপক…..!, যা অন্য ব্যাংকে আপনাকে ১০/১৫ বছর চাকরি করার পর হওয়া যায়!
এরপর যোগদানের পর থেকে ১বছর পূর্ণ হওয়ার পর সিনিয়র অফিসার পদে সরাসরি পদায়িত হবেন এবং জাতীয় বেতন স্কেল ৯ম গ্রেডে সবধরনের সুযোগ- সুবিধা প্রাপ্য হবেন। এরপর পদোন্নতির মাধ্যমে একদিন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ….
মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক
সিনিয়র অফিসার ও শাখা ব্যবস্থাপক
গ্রামীণ ব্যাংক
রাঙামাটি জোন।
Tag Also:
grameen banking, grameen bank bangladesh, grameen bank bd, grameen bank act, grameen bank nyc, grameen bank pdf, grameen bank ppt, grameen bank usa, grameen bank book, grameen bank job, grameen bank logo, grameen bank peru, grameen bank board, grameen banks are, grameen bank china, grameen bank job circular 2020, grameen bank circular,