সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ও চূড়ান্ত ফল এক বছরের মধ্যে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বিভাগ ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গুচ্ছভিত্তিক নিয়োগ হওয়ায় এবারই প্রথম সারা দেশে একযোগে নিয়োগ পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ করা হবে না। মোট তিন গুচ্ছে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আগামী মে মাসে প্রথম গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি
নাগাদ সর্বশেষ গুচ্ছের চূড়ান্ত ফলাফল দিয়ে শেষ হবে এই প্রক্রিয়া।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ও চূড়ান্ত ফল এক বছরের মধ্যে
সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের আট বিভাগকে মোট তিনটি গুচ্ছে ভাগ করা
হয়েছে।
- প্রথম গুচ্ছে রয়েছে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ।
- দ্বিতীয় গুচ্ছে খুলনা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগ।
- আর তৃতীয় গুচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ।
প্রথম গুচ্ছের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (রংপুর, বরিশাল ও সিলেট) ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। আর বাকি দুই গুচ্ছের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চলতি মাসেই প্রকাশ করার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেছিলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহে আরও
দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী মে মাসে। জুনের মধ্যে।
প্রাথমিকে গুচ্ছ নিয়োগ
- প্রথম গুচ্ছ: লিখিত পরীক্ষা মে মাসে, চূড়ান্ত ফল সেপ্টেম্বরে।
- দ্বিতীয় গুচ্ছ: লিখিত পরীক্ষা আগস্টে, চূড়ান্ত ফল নভেম্বরে।
- তৃতীয় গুচ্ছ: লিখিত পরীক্ষা অক্টোবরে, চূড়ান্ত ফল ফেব্রুয়ারি।
লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেষে আগস্টেই মৌখিক পরীক্ষা। এরপর সেপ্টেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে চায় ডিপিই। আর দ্বিতীয় গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে আগস্টের মাঝামাঝি। আগস্টের মধ্যেই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ শেষে অক্টোবরে হতে পারে মৌখিক পরীক্ষা। এরপর নভেম্বরে চূড়ান্ত ফল
প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।
এ ছাড়া তৃতীয় গুচ্ছের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে অক্টোবরে। নভেম্বরে ফল প্রকাশ শেষে আগামী বছরের জানুয়ারিতে শুরু হতে পারে মৌখিক পরীক্ষা। এরপর ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরিকল্পনা করেছে ডিপিই। নিয়োগ কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি এবং
অপারেশনস) ও নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব মনীষ চাকমা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিপিইর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়ে এ কর্মপরিকল্পনার কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। ডিপিই সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত
নিয়োগের জন্য আট বিভাগের অনুমোদিত শূন্য পদের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৬৩। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশির ঢাকা বিভাগে, ১ হাজার ৩৬৫ আর সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে, ৪১১টি। এ ছাড়া বরিশালে ৮৭১, রংপুরে ৯৮৮, খুলনায় ৯৪০, ময়মনসিংহে ৫৯৯, রাজশাহীতে ১ হাজার ৫৮ এবং চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৩১টি। তবে শূন্য পদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ডিপিই সূত্র জানিয়েছে।
কারণ হিসেবে নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালে আরও অনেক শিক্ষকের অবসরে যাওয়ার কথা জানান তিনি। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য শূন্য পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। দুই বছরের বেশি সময় পর সেই নিয়োগ শেষ হয় গত জানুয়ারিতে। এতে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জন প্রার্থী সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচিত হন। তবে এর মধ্যে ২ হাজার ৫৫৭ জন চাকরিতে যোগ দেননি। ফলে এ পদগুলো শূন্য থেকে যায়।