একের পর এক ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পেতে যাচ্ছেন সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবার থেকে নেওয়া হবে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হচ্ছে। ফলে একই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মধ্যে আসতে হবে। গত বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, রাষ্ট্রপতি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছ পদ্ধতির আওতায় আনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়েছেন। ইউজিসির পক্ষ থেকেও দফায় দফায় চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আশা করছি এ বছর থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হবে। উপাচার্যরাও এ পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটতে হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় একই দিনে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে। এমনকি সকালে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে বিকালে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। টানা দেড়-দুই মাস ধরে শিক্ষার্থীদের ভর্তিযুদ্ধের এক দুঃসহ লড়াইয়ে নামতে হয়। এ ছাড়া একটি আসনের বিপরীতে শতাধিক শিক্ষার্থীকে লড়াই করতে হয়। প্রতিযোগিতায় টিকতে শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে পুঁজি করে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কোচিং সেন্টারগুলো।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা নীতিগতভাবে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে। আহ্বায়ক কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন