জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রী এবং আরও অানুষঙ্গিক কোর্স রয়েছে। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারেন না।
এর প্রধান কারণ হলো যথাযথ নিয়মে উত্তরপত্রে না লেখার কারনে। তাই আজ আমাদের আয়োজন হলো – জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার খাতায় লেখার নিয়ম লেখার আগে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাশ মার্কস নিয়ে একটু আলোচনা করি। যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাশ মার্ক নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাশ মার্কস কত?
- ১০০ মার্কের মধ্যে ৪০ পেলে পাশ। অর্থাৎ শতকরা ৪০ ভাগ নাম্বার পেয়ে আপনাকে পাশ করতে হবে।
সুতরাং,
- ৮০ মার্কের পরীক্ষা হবে। ৩২ পেলে পাশ।
- ২০ মার্ক ইনকোর্স পরিক্ষা যা আপনার কলেজের হাতে।
- ইনকোর্স পরীক্ষায় ৮ পেলে পাশ।
- উল্লেখ্য, আবশ্যিক ইংরেজিতে পাশ মার্কস ৪০।
- কেউ কেউ ৩৩ বলে, তবে এটি ২০০৯-১০ সিলেবাসে ছিলো।
- বর্তমানে ২০১৩-১৪ সিলেবাস অনুসারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা পরিচালিত হয়।
এখন আসি কী করে উত্তর প্রদান করলে আপনি সময় মেনে পরীক্ষার উত্তর এবং সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করতে পারেন। প্রশ্নের ৩টি বিভাগ থাকবে।
▶ক বিভাগে ১২টা থাকবে ১০টা দিতে হবে।
- প্রতি প্রশ্নের মান ১।
- মার্ক ১×১০=১০
▶️খ বিভাগে ৮টা থাকবে ৫টা দিতে হবে।
- প্রতি প্রশ্নের মান ৪।
- মার্ক ৫ ×৪=২০
▶️গ বিভাগে ৮টা প্রশ্ন থাকবে ৫টা দিতে হবে।
- প্রতি প্রশ্নের মান ১০।
- মার্ক ৫ ×১০=৫০
আরও পড়ুনঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ভাল ফলাফল অর্জন করার উপায়।
সকল প্রশ্নের উত্তর কী ধারাবাহিক লিখতে হবে?
প্রশ্নের উপরে লিখা থাকে প্রত্যেক বিভাগে ধারাবাহিক ভাবে লিখতে হবে। ধারাবাহিকভাবে নাহ লিখলে প্রশ্নে নম্বর পাবেন নাহ। এর মানে হচ্ছে, আপনি ক বিভাগ শুরু করছেন ওটা শেষ করে অন্য বিভাগে যাবেন।
আপনি বিভাগের ভিতরে এলোমেলো করতে পারেন । ২ লিখে ৫ তারপর ৩ এভাবে লিখতে পারেন। কিন্তু একটি বিভাগের মধ্যে অন্য বিভাগের প্রশ্ন লিখবেন নাহ।
যেভাবে ক বিভাগের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন লিখবেন
ক বিভাগের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন অর্থ এক কথায় উত্তর দাও। প্রশ্ন যা চাবে তাই দিবেন। এইখানে যদি বানান বা কার চিহ্নের ভুল হলেও মার্ক কাটা চলে যাবে। একদম লেখা স্বচ্ছ ও ঝকঝকে হবে। যাতে একবার দেখলে আর দেখা না লাগে।
যদি ১২টা কমন পড়ে তবে অনেকে ১২টাই লিখে দেয়। আমি খাতা পড়ছি। তখন টিচার ১ম ১০টা কাউন্ট করে। যদি ঐখানে ১টা ভূল হলেও ৯ পাবেন । শেষের ২টা যোগ হবে না।
যেভাবে খ বিভাগের সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন লিখবেন
খ বিভাগে কিছু ক্যাটাগরিতে প্রশ্ন হয়ে থাকে। যেমন , সংজ্ঞা লেখ, বুঝিয়ে লেখ, কী , কেন ,কীভাবে ,কাকে বলে ,সংক্ষেপে লেখ ইত্যাদি। যেমন প্রশ্নের ক্যাটাগরি আছে তেমন উত্তরের ক্যাটাগরি আছে।
যদি কাকে বলে ,কী বা সংজ্ঞা টাইপের প্রশ্ন আসে তাহলে: শুরুতে ভূমিকা লিখতে হবে এবং বাধ্যতামূলক লিখতে হবে। আর শেষে উপসংহার দিবেন। এই ধরনের প্রশ্ন আপনি ১পাতা লিখবেন। ১পাতা বলতে দুইটা পৃষ্ঠা বা এপিট ওপিট বুঝায়। বেশি লিখলে সমস্যা নাই।
যেভাবে গ বিভাগের রচনামূলক প্রশ্ন লিখবেন
মাথায় রাখবেন এই বিভাগের প্রতিটি প্রশ্নের মার্ক ১০। যতই ভালো লিখেন আপনাকে ১০ এ ১০ দিবে নাহ, সর্বোচ্চ ৮/৯। আপনার ভালো রেজাল্টের জন্য এই বিভাগের ভূমিকা অনেক।
এই বিভাগকে বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা , ভূমিকা, প্রভাব, ইত্যাদি টাইপ প্রশ্ন থাকে। এই বিভাগের ভূমিকা একটু বড় রাখলে ভালো হয়। ১টা প্রশ্নে ভূমিকা উপসংহার বাদে কম করে ১২ থেকে ১৩টা পয়েন্ট রাখতে চেষ্টা করবেন।
এই প্রশ্ন ৮ পৃষ্ঠা বা ৪ পাতার একটু কম বেশি হয়। খেয়াল রাখবেন পয়েন্টগুলো যাতে বই রিলেটেড থাকে। শেষে বানায়া দিতে পারেন। লিখা স্পষ্ট রাখতে চেষ্টা করবেন। ভালো রেজাল্টের জন্য এই বিভাগ থেকে ৩টি প্রশ্ন কমন থাকতে হবে।
উপসংহার এবং ভূমিকা লিখব কিভাবে
বর্ণনামূলকের ক্ষেত্রে ভূমিকা উপসংহার তো থাকবেই মাঝে মূল কথা লিখতে হবে। মূল কথাতে যদি পয়েন্ট থাকে তবে প্যারা আকারে লিখা যাবে। এই ক্যাটাগরির প্রশ্ন ২ পাতা বা ৪ পৃষ্ঠা লিখতে হয়।
পরিশেষে আবার বলছি, প্রত্যেক বিভাগে ধারাবাহিক ভাবে লিখতে হবে। ধারাবাহিকভাবে নাহ লিখলে প্রশ্নে নম্বর পাবেন নাহ।