জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ে অধীনে ভাল ফলাফল অর্জন করার উপায়

আলহামদুলিল্লাহ সন্মানের সাথে অনার্স জীবন শেষ করতে পেরেছি,ডিপার্টমেন্টে প্রতিবছরের মতো প্রথম স্হান অর্জন করতে পরেছি।
কিন্তু যারা বর্তমানে অনার্সে অধ্যায়নরত আছেন,বা নতুন অনার্সে ভর্তি হবেন তাদের রেজাল্ট ভালো করার কিছু টিপস্ আপনাদের সবার জন্য যেটা না বললেই হয়না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ে অধীনে ভাল ফলাফল অর্জন করার উপায়

চাকরির পাশাপাশি যারা পড়াশোনা করেন,বা চাকরি করেন না তাদের জন্যও এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আমি আমার ব্যক্তিগতভাবে নোট করার পদ্ধতি টা শেয়ার করছি,
প্রথমত আপনি যেটা করবেন সেটা হচ্ছে,বোর্ড পরীক্ষায় এসেছে এমন সবগুলো বোর্ডের প্রশ্ন মার্ক করবেন,সেটা যদি এর আগের বছরও আসে তবুও মার্ক করবেন,সাজেশন দেখে সেখান থেকে ৩*, ২* গুলো আলাদা করবেন।
এভাবে আলাদা করার পর প্রতিটা বিষয়ের জন্য আলাদা করে একটা খাতা রাখবেন,যেখানে প্রথমে সেই খাতার উপরে নাম লিখবেন একটা বিষয়ের সেখানে অন্য কোনো বিষয়ে কিছুই লিখবেন না,খাতার ভিতরে আপনি দেখবেন কতগুলো পেইজ আছে,যেই বিষয়ে লিখবেন সেই বিষয়ের অধ্যায় গুলো দিয়ে পেইজ সংখ্যাকে ভাগ করে প্রতিটা অধ্যায়ের জন্য সমান ভাবে জায়গা রাখবেন।
তারপর প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম লিখে নিবেন,সেই বিষয়ের প্রথম অধ্যায়ে যেই যেই বোর্ড প্রশ্ন আছে সবগুলো একটা একটা করে লিখবেন।
যেমন ধরেন একটা প্রশ্ন লিখলেন তার নিচ দিয়ে উত্তর দেওয়ার পরিবর্তে শুধু সেই প্রশ্নের উত্তর গুলোর যে পয়েন্ট বা কোটেশন আছে সেগুলো লিখবেন।
এভাবে প্রতিটা প্রশ্নের জন্য প্রতিটা উত্তর থাকবে,কিন্তু সেগুলো পূর্ণাঙ্গ উত্তর না,শুধুমাত্র কোটেশন,বা পয়েন্ট লিখে নিন।।
এখন আসেন সেগুলো নিয়ে পড়াশোনা করবেন কি করে,,,সেজন্য আপনাকে করতে হবে কি,সেই বোর্ড প্রশ্নের উত্তর গুলো সাজেশনের উত্তর মালা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
সেখানে ধরেন একটা প্রশ্নের জন্য অনেকগুলো স্টেপ বা কোটেশন বা পয়েন্ট দেওয়া আছে,আপনি সবগুলো পরবেন না,শুধু যেগুলো আপনি মনে রাখতে পারবেন,আর সহজ সেগুলোই পরবেন।
আর স্টেপের মধ্যেও যে বিস্তারিত লিখা আছে সেগুলোও পরবেন না,শুধু মেইন যে কথাটা সেটাই পরবেন,এবং অবশ্যই সেটা নীল বা লাল কালি দিয়ে মার্ক করবেন,যেন পরিক্ষার সময় বা পরবর্তী সময়ে আপনাকে পুরোটা না পড়তে হয়,অল্প কথাতে যেন আপনি সুন্দর করে উত্তর টা দিতে পারেন।
আর নোটের মধ্যে যে স্টেপ বা কোটেশন বা পয়েন্ট লিখেছেন এগুলো আপনাকে পরিক্ষার সময় সবথেকে বেশি কাজে দিবে,পরিক্ষার সময় আপনি কখনই পুরোটা বই পড়ে শেষ করতে পারবেন না,আপনি যদি একবার সেই পয়েন্ট গুলো পরে বুঝতে পারেন পরবর্তীতে আর আপনাকে বইয়ে ধরতে হবেনা,শুধু নোটের মধ্যে থেকে পয়েন্ট গুলো একবার পড়ে যাবেন দেখবেন সবকিছুই কত সহজ হয়ে যাচ্ছে।
নোট গুলো করে রাখার অন্যতম কারণ হলো আপনি যেকোনো মুহুর্তে এগুলো তে একবার চোখ দিলেই সবটুকু পরিষ্কার হয়ে যাবে আপনার কাছে।
আপনি এভাবে প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের জন্য আলাদা করে সবগুলো প্রশ্ন লিখবেন,এর নিচেই উত্তর গুলোর স্টেপ লিখবেন।
আর দেখবেন প্রতিটা অধ্যায়ের প্রথমের দিকে বিভিন্ন অধ্যায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়,যেমন বাজারজাত বলতে কি বুঝ?
৪ নাম্বারের জন্য যে প্রশ্নগুলো আছে সেগুলো পরীক্ষায় এখন আর আসেনা,এগুলোর জন্য বেশি সময় নষ্ট করবেন না।আমি শুধু ১ ম বর্ষে এমন দেখেছিলাম এসেছিল,আর বাকি ৩বছর দেখিনি আসতে।
ক বিভাগের ১নাম্বরের জন্য অবশ্য কাজে লাগে এগুলো,কিন্তু ক বিভাগের ১ নাম্বারের প্রশ্নের জন্য শুধু বোর্ড প্রশ্ন পড়লেই ৭-৮ টা কমন পাবেন শিউর।
আর একটা কাজ যেভাবে করবেন সেটা হলো প্রতিটা প্রশ্ন পড়ার সময় সেই প্রশ্নের উত্তর গুলোর মধ্যে যে লেখকের ব্যাখ্যা বা মতামত আছে সেগুলো মন দিয়ে পড়বেন।
প্রতিটা বিষয়ের জন্য যে নোট করবেন সেটার প্রথম পৃষ্ঠায় এই বইয়ের মধ্যে যেসব লেখকের নাম আছে,শুধু সেই লেখকের নাম লিখে রাখবেন, পরীক্ষার সময় লেখকের নাম গুলো একনজরে দেখে গেলেই হবে।
প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর ১০ মিনিট প্রশ্ন পড়বেন,৩০ মিনিটে ক বিভাগের যে কয়টা পারেন উত্তর করবেন তারপর গ বিভাগ দিবেন।গ বিভাগের প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ২৫ মিনিট দিবেন সময়।২৫*৫ =২ঘন্টা ৫ মিনিটে গ বিভাগ শেষ।খ বিভাগের জন্য আরো হাতে থাকবে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মতো।
পরীক্ষার হলে কখনোই যেটা না পরেন সেটা নিয়ে বসে থাকবেন না।ক বিভাগের প্রশ্নের উত্তর না পরলে ২পৃষ্টা জায়গা রেখে গ বিভাগে চলে যান।
কখনই খ বিভাগ আগে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না,গ বিভাগে ১০ নাম্বার, আপনি গ বিভাগে অনেকটা সময় ব্যয় করেন,প্রতিটা প্রশ্নের জন্য ২৫-৩০ মিনিট সময় দিবেন।এর বেশি দিবেন না,আর প্রশ্নের উত্তর ভুমিকা আকারে দিবেন,পরবর্তীতে স্টেপ দিবেন শেষে উপসংহার দিবেন।
ভুমিকা ১পৃষ্টা,স্টেপ ১২-১৪ টা ৩পৃষ্টা এবং উপসংহার ১পৃষ্টা,মোট ৫ পৃষ্টার মধ্যেই আপনার উত্তর হয়ে যাবে,প্রশ্নের উত্তর বেশি বড় করতে যাবেন না।
ভুমিকার মধ্যে প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে  লেখকের মতামত তুলে ধরতে পারেন এতে ভালো নাম্বার আসবে।আর স্টেপ গুলোর মধ্যে বেশি বড় করে লিখার দরকার নাই।শুধু মেইন কথা লিখলেই হবে।
খ বিভাগের জন্য ২পৃষ্টা দিলেই যথেষ্ট, আর চেষ্টা করবেন পার্থক্য আছে এমন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য।
আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন।
তারপরেও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে বলবেন আমি আরো বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে দিবো।
সবার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
ধন্যবাদ।

About Nazmul Hasan

Hi! I'm Nazmul Hasan. From Koyra, Khulna. I'm Student of Under National University of Govt. B. L. College, Khulna, Department of Political Science....

Check Also

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিজিপিএ বের করার নিয়ম। জাঃবিশ্বঃ জিপিএ/সিজিপিএ/বিভাগ নির্ণয়। গ্রেডিং সিস্টেম। 80-100 → A+(Plus) → …