প্রাইমারি পরীক্ষায় করণীয় ও বর্জনীয় :
এটা হয়তো অনেকেরই শেষ পরীক্ষা। তাই সামান্য একটু ভুলের জন্য যেন স্বপ্নটা হাতছাড়া না হয়ে যায়।
তাই আমার মতো করে আমি কিছু পরামর্শ দিচ্ছি আপনি আপনার মতো করে সেগুলো কাজে লাগাবেন ( প্রয়োজন মনে হলে)।
ইতোমধ্যেই আপনারা ডিপিইর নোটিশ দেখেছেন এবং এবারের পরীক্ষা পদ্ধতিতে বেশ কিছু নতুন নিয়ম দেখেছেন। সেগুলো অবশ্যই ফলো করতে হবে।
১। পরীক্ষার হলে ১ ঘণ্টা আগে যেতে বলেছে। তার মানে অবশ্যই ১ ঘণ্টা আগে যেতে হবে। যদি কোনো কারণে লেইট করেন আর দুর্ভাগ্যক্রমে প্রবেশ করতে না দেয় তাহলে স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে। একটু লেইট হলে কিছু হবে না, ঢুকতে দিবে এমন সস্তা চিন্তা অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
২। ওএমআর পাওয়ার পর ভালো করে সবকিছু খেয়াল করে বৃত্ত ভরাট করবেন। রোল নম্বর বাংলায় চাইলে বাংলা, ইংরেজিতে চাইলে ইংরেজিতে লিখবেন। সেটকোড ভালো করে খেয়াল করে ফিলাপ করবেন। হাজিরা শীটে উপস্থিতির ঘর অবশ্যই ফিলাপ করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি বাচ্চা না সবকিছুই সহজ বাংলায় লেখা আছে এবং ভালো করে ধীরে-সুস্হে ফিলাপ করবেন। ওএমআর অন্তত ১০ মিনিট আগে দিবে। না দিলে দেওয়ার কথা বলবেন।
৩। এবার ওএমআরে বাংলায় তিনটি বাক্য এবং ইংরেজিতে দুটি বাক্য লিখতে হবে। এটা শুরুতেই লিখে ফেলবেন। এটা না লিখলে ওএমআর কাউন্ট হবে না।
৪। দুইকপি এডমিট নিয়ে যাবেন। আগেই এক কপি জিমেইলে ডাউনলোড করে রাখবেন। রাফ করতে হয় প্রশ্নেই। অঙ্কতো আর মুখস্থ করবেন না। ভুল করেও টিচারকে বলবেন না প্রশ্নে রাফ করতে পারবেন কি-না। এতে টিচার বিরক্ত হয় এবং আপনার অযোগ্যতা অটো বুঝে ফেলবে। বিসিএস, ব্যাংক সহ সব পরীক্ষায়ই প্রশ্নে রাফ করে এসেছেন এমনকি প্রশ্ন নিয়ে গেলেও। প্রশ্নে রাফ করা যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা থাকে না। কিন্তু কিছু কিছু হলে কিছু মূর্খ এবং অযোগ্য টিচার থাকে তারা প্রশ্নে রাফ করতে দেয় না। তখন এডমিটে করবেন। অনেকেই এই জায়গাটাতে ধরা খাবে। এডমিট এক কপি ডাউনলোড করে। তার হলে পড়ে কোনো বাজে টিচার, রাফ করতে দেয় না। এদিকে এডমিট এক কপি, জিমেইলে ডাউনলোড করে রাখে না। ফলে ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষা খারাপ হয়। পরীক্ষার হলে কিছু পিচ বলবেই স্যার, প্রশ্নে রাফ করতে পারব কি-না ( মিলিয়ে নিয়েন) এই পয়েন্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৫। পরীক্ষার সাল হবে ২০২০ ( এটা কেবল প্রাইমারির বেলায়)। বিষয়টা অনার্সের মতো। আপনার সন্দেহ দূর করার জন্য প্রশ্নে তাকাবেন। প্রশ্নে যেটা আছে সেটা লিখবেন। হল পরিদর্শকরা এতো এক্সপার্ট না। এরা এতটা জানে না। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।
৬। প্রশ্নে ধারাবাহিকতা থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। ধারাবাহিকতা থাকলে + পয়েন্ট। প্রথমেই যেগুলো ১০০% পারেন সেগুলো ভরাট করবেন। যেগুলোতে সামান্য হলেও কনফিউশান থাকবে সেগুলো একটা দাগ দিয়ে স্কিপ করে যাবেন। পরবর্তীতে সেগুলো দাগাবেন। মানুষের ব্রেইন প্রথম অবস্থায় ফুল স্পিডে কাজ করে না, দ্বিতীয়বার খুব ভালো করেই করে। বিষয়টা গাড়ির গতির মতো। শুরুতে স্পিড একটু কম থাকে তারপর ফুল স্পিডে
৭। অনলাইনের সব তথ্য সত্যি হয় না। অনলাইনে প্রশ্ন বেচাকেনার দিকে নজর দিবেন না। এগুলো ফাঁদ। মূলতঃ যারা এসবের সাথে জড়িত তারা অনলাইনে এসব করে না। এরা গভীর জলের ফিশ।
৮। আজকে এবং কালকে বিসিএস ও প্রাইমারির বিগত সব ভালো করে রিভিশন দিন। এখান থেকে ৫০% রিপিট হবেই।
৯। পরীক্ষার আগের দিন ফ্রেশ মুডে থাকুন। কমেডি নাটক, মুভি দেখুন। মন ভালো থাকবেই। পরীক্ষার আগের দিন রাত জেগে পড়বেন না। ভালে একটা ঘুম একটা ভালো পরীক্ষার পূর্ব শর্ত।
সর্বোপরি সবার জন্য শুভকামনা করছি। ঈশ্বর/ আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুক।
শুভকামনায়:
প্রজ্ঞা সাহা ( সহকারী শিক্ষিকা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)