জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইবিএ। ফ্রম ন্যাশনাল টু আইবিএ। অনেকেই ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ তে চান্স পাওয়ার জার্নি এবং কৌশল বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। গত কয়েকদিন প্রচন্ড ব্যস্ত থাকার কারনে অনেককেই সেভাবে হেল্প করতে পারিনি। এই পোস্টে তাই আমি আইবিএ নিয়ে নিজের পার্সপেক্টিভটা তুলে ধরছি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইবিএ
প্রথমত, ন্যাশনাল থেকে কিভাবে আইবিএ তে চান্স পাওয়া যায় এই প্রশ্নটাই অনেক মিসলিডিং। আচ্ছা আপনি বলুন তো আইবিএ কি কারো ব্যাকগাউন্ড দেখে আলাদা আলাদা প্রশ্ন সেট করে? আইবিএ তে চান্স পাওয়ার জন্য আপনাকে বেশ ভালো ম্যাথ, ইংলিশ জানতে হবে আর মানসিকভাবে স্মার্ট হতে হবে, ব্যস এতটুকুই। একটা কথা মনে রাখবেন, আইবিএ যতটা না মেধা যাচাইয়ের পরিক্ষা তার থেকে অনেক বেশি স্মার্টনেস যাচাইয়ের পরিক্ষা। আর আপনি যদি শুরুতেই নিজেকে ছোট ভাবতে থাকেন, তাহলে বোধহয় আপনার কনফিডেন্স এবং স্মার্টনেসের জায়গাটাতে আরেকটু কাজ করার সুযোগ আছে। আর এই ইন্টারনেটের যুগে রিসোর্স কালেক্ট করা, ইনফরমেশন যোগাড় করা কোনো ব্যাপারই না।
তাই ভারী ভারী নাম দেখে ভয় না পেয়ে একটা ট্রাই করে দেখুনই না, আপনার ইনিংসের মাঝের কয়েকটা ওভার খারাপ গিয়েছে তাই স্লগ ওভারে মারতে পারবেন না এমন কিন্তু কোনো কথা নেই। প্রস্তুতির বিষয়ে আজকে শুধু ইংরেজি সেকশন নিয়েই লিখছি যেহেতু পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে।
আইবিএর ইংরেজি সেকশনকে রাফলি তিনটা অংশে ভাগ করা যায়।
- ভোকাবুলারি,
- গ্রামার, এবং
- রিডিং কম্প্রিহেনশন।
২৫-৩০ মার্কের মধ্যে ১৫-১৮ মোটামুটি সেফ স্কোর বলা যেতে পারে। বাংলা মিডিয়াম হওয়াতে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অনেক স্টুডেন্টেরই ইংরেজি ভীতি থাকে। এটা আসলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা; ইংরেজি আমাদেরকে শেখানো হয় একটা সাবজেক্ট হিসেবে, ভাষা হিসেবে নয়। ইংরেজিকে বশে আনতে হলে আপনাকে প্রচুর ইংরেজি শুনতে হবে এবং পড়তে হবে। লিসেনিং এর জন্য মুভি, সিরিজ, পডকাস্ট, টেডটক খুব ভালো রিসোর্স আর অন্যদিকে রিডিং এর জন্য নন ফিকশন বই, পত্রিকা, নিউজপেপার, জার্নাল এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
বেসিক লেভেলে দ্য ডেইলি স্টার, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এগুলো ইউজ করা যেতে পারে আর ফ্লুয়েন্সি চলে আসলে হাভার্ড বিজনেস রিভিউ, রিডার্স ডাইজেস্ট, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট অব জার্নাল এগুলো চমৎকার অপশন। আইবিএ কিন্তু রিডিং কম্প্রিহেনশন এখন দুটো করে দেয়, আর মাঝে মাঝে এসব পত্রিকা, জার্নাল থেকে হুবহু প্যাসেজ তুলে দেয়। তাই রেগুলার এগুলো পড়তে পারলে আপনি নিসন্দেহে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবেন। নিয়মিত পত্রিকা পড়া আপনার ভোকাবুলারি আর রাইটিং স্কিলও অবিশ্বাস্য রকম বাড়িয়ে দিবে।
ভোকাবুলারিঃ এই পার্টটা আয়ত্ত করা একটু টাইম কনজিউমিং। আমার কাছে ওয়ার্ড স্মার্ট ১+২ ভোকাবুলারি মুখস্ত করার বেস্ট বই মনে হয়েছে এখন পর্যন্ত। তবে শুধু মুখস্ত করে মনে রাখতে পারবেন না, প্রচুর রিডিং, ফ্ল্যাশকার্ড এগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া যেই ওয়ার্ড গুলোই শিখছেন এগুলো নিয়মিত ইউজ করতে ভুলবেন না। এই পার্টের প্রশ্ন প্র্যাকটিসের জন্য প্রিভিয়াস কোশ্চেন, ব্যারন্স স্যাট, ৫০১ সেটেন্স কমপ্লিশন পিডিএফ এগুলো ইউজ করুন, বস লেভেলে চলে যাবেন।
গ্রামারঃ এই পার্টের প্রশ্নগুলো একটু ট্রিকি হয়। এখানে ভালো করার জন্য প্রথমেই ক্লিফস টোফেল বইটা ভালোভাবে দুইবার রিডিং পড়ে ফেলুন। এরপর শুরু আসল কাজ- প্র্যাকটিস। সেটেন্স কারেকশন, এরোর ডিটেকশন, ইত্যাদির জন্য ব্যারন্স স্যাট, জিম্যাট অফিশিয়াল গাইড, বিভিন্ন অনলাইন সোর্স ইউজ করুন। মনে রাখবেন, এখানে ভুল থেকে শেখা জরুরি। যে রুলসটা ভুল করছেন, সেটা খাতায় নোট করে ফেলুন এবং রিভাইস করুন, আশা করি ভালো ফল পাবেন।
রিডিং কম্প্রিহেনশনঃ এই পার্টের টেকনিক উপরেই বলে ফেলেছি। প্রচুর রিডিং পড়াই এখানের মূল কৌশল, সেইসাথে প্রিভিয়াস কোশেন আর জিম্যাট অফিশিয়াল গাইড থেকে সলভ করলেই হয়ে যাওয়ার কথা।
সবশেষে, ইংরেজিতে দ্রুত ভালো করতে হলে ইংরেজি পড়ুন, ইংরেজি শুনুন, ইংরেজিতে খান, ইংরেজিতে ঘুমান। আইবিএ কঠিন অবশ্যই, কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রেস্টিজিয়াস বিজনেস স্কুলের স্টুডেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতে আপনাকে প্যাশনেট এবং অধ্যবসায়ী হতেই হবে। একটা বিগ হিট যদি নামের পাশে একটা সেঞ্চুরি যোগ করতে পারে, তবে মারুনই না সব শক্তি দিয়ে একটা।
(ম্যাথ আর অ্যানালাইটিক্যাল পার্ট খুব শীঘ্রই ইনশাআল্লাহ)
Partha Saha
IBA (DU) 65D