প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি প্রস্তুতি ২০২৩। সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা সার্কুলার হয়েছে। সহকারী পরিচালক (নন – টেকনিক্যাল) : ০৬ টা পোস্ট এবং সহকারী পরিচালক (এডি) : ১১ টা পোস্ট।
১ নং পোস্ট হলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এডি। এখানে চাকরি পেলে পোস্টিং হবে আর্মি/নেভি/এয়ার হেট কোয়ার্টারে, সশস্র বাহিনী বিভাগে, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয়ে। ৯-৫ টা অফিস। শুক্র, শনি, সরকারি ছুটির দিনে ছুটি। ফুল সরকারি অফিসের মত অফিস। ৫ বছরে ডিডি হওয়া যাবে, মিশন সুবিধা আছে।
২ নং পোস্ট হলো প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের এডি। এখানে পোস্টিং সারা বাংলাদেশেই হতে পারে। বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট, বিভিন্ন জেলায় ক্যান্টনমেন্ট না থাকলেও পোস্টিং হয়। (সব জেলায় অফিস নাই)। শুক্র, শনি, সরকারি ছুটির দিনে ছুটি নাই। ছুটি নির্ভর করে বসের উপরে। এই চাকরিতে সামরিক অফিসার সব সময় বস হবেন। এখানে চাকরি করতে হবে আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্সের অফিসার ও অন্যান্য পদবীর লোকজনদের সাথে। এই চাকরিতে সর্ব সাকুল্যে সিভিল অফিসার আছে ১২০/১৩০ জন। অন্যরা সবাই সামরিক অফিসার। ৬ বছরে ডিডি হওয়া যায়, মিশন সুবিধা নাই। (আমি এই পোস্টে প্রায় ২.৫ বছর চাকরি করেছি।)
উভয় চাকরিতেই রেশন, সিএমএইচ সুবিধা পাওয়া যায়। ক্যান্টনমেন্ট এ কোয়ার্টার সুবিধা পাওয়া যায়। অনেকে ভুল জানেন। অনেকেই জানেন এগুলো ব্লক পোস্ট। এগুলো ব্লক পোস্ট না। নন-ক্যাডার চাকরি হিসেবে এই চাকরিতে প্রমোশন সুবিধা ভালো। সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালক, সিনিয়র অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক। (প্রমোশন গ্রোথ ভালো, তবে স্লো)
উভয় চাকরিতেই সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বেতন দেয়া হয়। বিসিএস বাদে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত বলে ১টা অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পাওয়া যায়। বেসিক হয় ২৩,১০০ টাকা।
অনেকেই প্রশ্ন করেন অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে। সকল সরকারি চাকরিই অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিছু শর্তাবলী পূরণ ও নির্দিষ্ট সময় (সাধারণত ২ বছর) সন্তোষজনকভাবে চাকরি করলে চাকরি স্থায়ী হয়। এটাই সকল সরকারি চাকরির নিয়ম।
সব চাকরিতেই কিছু সুবিধা, কিছু অসুবিধা থাকে। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির ঘাটতি থাকে। চাকরি মাঝে মাঝে ভালো লাগে, মাঝে মাঝে ভালো লাগে না। চাকরির ক্ষেত্রে চিরন্তন সত্য: “তোমার কোথায় পোস্টিং সেটা বিষয় না, কার আন্ডারে পোস্টিং সেটাই বিষয়। বস ভালো তো চাকরি ভালো।” চাকরির ক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি: “ভাবিয়া করিও চাকরি, করিয়া কাঁদিও না। ”
প্রস্তুতি:
আমি ২০১৭ সালে ভাইবা দিয়েছিলাম। সেবার শুধু প্রিলি আর ভাইবা হয়েছিল। (২০১৭ সালে চাকরি পাই নাই) ২০১৮ সালে প্রিলি, রিটেন এবং ভাইবা হয়েছিল। গতবার রিটেন আর ভাইবা হয়েছিল।
- ১. প্রিলি: ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা হয়। ৮০ টা প্রশ্ন থাকে। প্রশ্নে যদি নেগেটিভ মার্কের কথা উল্লেখ না থাকে তাহলে নেগেটিভ মার্ক নেই। আমাদের সময় নেগেটিভ মার্কিং ছিল না। বাংলা, ইংরেজি, ম্যাথ, আর সাধারণ জ্ঞান।
- ২. রিটেন: ২০০ মার্কের পরীক্ষা হয়েছিল। প্রশ্ন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। বাংলা, ইংরেজি প্যাসেজ ছিল, ম্যাথ আর ডাটা সাফেন্সিয়েন্সি ছিল।
- ৩. ভাইবা: কত মার্ক ছিল সেটা জানি না। তবে ভাইবা বোর্ডে ১০/১২ জন মেম্বার থাকেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব স্যার থাকেন। ভাইবা হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। (গনভবনের পাশে) চাকরির প্রস্তুতি সব একই রকম। আমি শুধু বিসিএস এর প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।
Tareque Rahman
সহকারী পরিচালক
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর।
(১৮ আগস্ট ২০২০ থেকে ০৩ ডিসেম্বর ২০২২)বর্তমানে সহকারী কমিশনার এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে
বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত। (৪০ বিসিএস)