পেনশনের হার পেনশন ও চিকিৎসা ভাতার হার নির্ধারণের বিষয়ে উদ্ভূত সমস্যা নিরসন সংক্রান্ত। বিধান অনুযায়ী একজন চাকরিজীবীকে অবসরকালীন মোট পেনশনের ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলক সমর্পণ করতে হয়। বাকি ৫০ শতাংশ মাসিক নিট পেনশন হিসাবে গ্রহণ অথবা সমর্পণ করতে পারেন। নতুন বেতন স্কেলে পূর্ণ পেনশন সমর্পণ করলে প্রতি এক টাকার বিপরীতে ২৩০ টাকা আনুতোষিক হার বহাল রাখা হয়েছে।
পেনশন হিসাব ২০২৩ – পেনশনের হিসাব কিভাবে হয়?
তবে পেনশন যোগ্য চাকরিকাল সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে ৫ বছরে কমিয়ে আনার কারণে আনুতোষিক হার পূর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পেনশনযোগ্য চাকরিকাল ৫ থেকে ৯ বছর হলে আনুতোষিকের হার প্রতি এক টাকার বিপরীতে ২৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এটি পুরনো বেতন কাঠামোতে ছিল না। তবে চাকরিকাল ১০ বছরের বেশি এবং ১৫ বছরের কম হলে আনুতোষিক হার প্রতি এক টাকার বিপরীতে ২৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া চাকরির বয়স ১৫ বছরের বেশি কিন্তু ২০ বছরের কম হলে আনুতোষিক হার প্রতি এক টাকার বিপরীতে ২৪৫ টাকা এবং চাকরির বয়স ২০ বছরের বেশি হলে আনুতোষিক হার প্রতি এক টাকার বিপরীতে ২৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
পেনশন হিসাব ২০২৩
পেনশন যোগ্যতার আগে মৃত্যুবরণ বা অক্ষম হলে,
কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর চাকরির বয়স ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই স্বাস্থ্যগত কারণে অক্ষম বা মৃত্যু হলেও একটি বিধান রাখা হয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে। এতে বলা হয়েছে, চাকরির মেয়াদের প্রতি বছর বা তার অংশবিশেষের জন্য সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবীর সর্বশেষ প্রাপ্য বেতনের তিনটি মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ সহায়তা হিসেবে পাবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা তার পরিবার। পুরনো বেতন কাঠামোতে এককালীন ১৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দেয়া হতো।
বিধবা স্ত্রীর আজীবন পেনশন
বর্তমান বিধান মতে মৃত চাকরিজীবীর বিধবা স্ত্রী আজীবন পারিবারিক পেনশন পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে পুনরায় বিয়ে না করার অঙ্গীকারনামা বা প্রত্যয়নপত্র দিতে হয়। নতুন বেতন কাঠামোতে মৃত চাকরিজীবীর স্ত্রীর বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে হলে সে ক্ষেত্রে অঙ্গীকারনামা বা প্রত্যয়নপত্রের প্রয়োজন হবে না।
মৃত মহিলার বেসামরিক স্বামীর পারিবারিক পেনশন,
পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে মহিলা চাকরিজীবী মারা গেলে, তার বেসামরিক চাকরিজীবী স্বামী আজীবন পারিবারিক পেনশন পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে শর্ত থাকে স্বামী পুনরায় বিয়ে করতে পারবেন না। তবে নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, স্বামী সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত পারিবারিক পেনশন ভোগ করতে পারবেন।
অবসরভোগীদের পেনশন বৃদ্ধি
অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীর বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে বর্তমান পেনশন যা পাচ্ছেন সেখান থেকে আরও ৫০ শতাংশ বাড়বে। আর বয়স ৬৫ বছরের নিচে হলে বর্তমান প্রাপ্য পেনশনের ৪০ শতাংশ বাড়বে। তবে একজন অবসরভোগীর মাসিক পেনশন যাই হোক না কেন এখন থেকে তিনি সর্বনিু ৩ হাজার টাকা পেনশন পাবেন।
ছুটি নগদায়ন
সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবসরকালীন অর্জিত ছুটি নগদায়নের বিধান পরিবর্তন করা হয়েছে। পুরনো বেতন কাঠামোতে অর্জিত ছুটি পাওনা সাপেক্ষে ১২ মাসের ছুটি নগদায়ন করা যেত। নতুন কাঠামোতে ১৮ মাসের বেতন নগদায়নের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া অবসর উত্তর ছুটি এবং ছুটি নগদায়নের ক্ষেত্রে দু’দিনের অর্ধগড় বেতনের ছুটিকে এক দিনের গড় বেতনের ছুটিতে রূপান্তর করা যাবে।
পেনশন হিসাব ২০২৩
- চাকুরির বয়স ৫ বছর হলে, মূলবেতনের ২১%
- চাকুরির বয়স ৬ বছর হলে, মূলবেতনের ২৪%
- চাকুরির বয়স ৭ বছর হলে, মূলবেতনের ২৭%
- চাকুরির বয়স ৮ বছর হলে, মূলবেতনের ৩০%
- চাকুরির বয়স ৯ বছর হলে, মূলবেতনের ৩৩%
- চাকুরির বয়স ১০ বছর হলে, মূলবেতনের ৩৬%
- চাকুরির বয়স ১১ বছর হলে, মূলবেতনের ৩৯%
- চাকুরির বয়স ১২ বছর হলে, মূলবেতনের ৪৩%
- চাকুরির বয়স ১৩ বছর হলে, মূলবেতনের ৪৭%
- চাকুরির বয়স ১৪ বছর হলে, মূলবেতনের ৫১%
- চাকুরির বয়স ১৫ বছর হলে, মূলবেতনের ৫৪%
- চাকুরির বয়স ১৬ বছর হলে, মূলবেতনের ৫৭%
- চাকুরির বয়স ১৭ বছর হলে, মূলবেতনের ৬৩%
- চাকুরির বয়স ১৮ বছর হলে, মূলবেতনের ৬৫%
- চাকুরির বয়স ১৯ বছর হলে, মূলবেতনের ৬৯%
- চাকুরির বয়স ২০ বছর হলে, মূলবেতনের ৭২%
- চাকুরির বয়স ২১ বছর হলে, মূলবেতনের ৭৫%
- চাকুরির বয়স ২২ বছর হলে, মূলবেতনের ৭৯%
- চাকুরির বয়স ২৩ বছর হলে, মূলবেতনের ৮৩%
- চাকুরির বয়স ২৪ বছর হলে, মূলবেতনের ৮৭%
- চাকুরির বয়স ২৫ বছর হলে, মূলবেতনের ৯০%
*চাকুরির বয়স ২৫ বছর এবং তদোর্ধ্ব হলে, মূলবেতনের ৯০% পেনশন পাবেন।
*মাসিক পেনশন= (বেসিক×শতকরা হার)÷২+ চিকিৎসা ভাতা
পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল
চাকুরির বয়স পাঁচ(৫) বছরের কম হলে, পেনশনযোগ্য হবে না।
পাঁচ(৫) বা ততোধিক কিন্ত ১০(দশ) বছরের কম হলে,
আনুতোষিক এর হার ১(এক) টাকার বিপরীতে ২৬৫ টাকা পাবেন।
- দশ(১০) বছরের অধিক কিন্ত ১৫(পনেরো) বছরের কম হলে, আনুতোষিক এর হার ১(এক) টাকার বিপরীতে ২৬০ টাকা পাবেন।
- পনেরো(১৫) বছরে অধিক কিন্ত ২০(বিশ) বছরের কম হলে, আনুতোষিক এর হার ১(এক) টাকার বিপরীতে ২৪৫ টাকা পাবেন।
- বিশ(২০) বছরের অধিক কিন্ত ২৫(পঁচিশ) বছরের কম হলে, আনুতোষিক এর হার ১(এক) টাকার বিপরীতে ২৪০ টাকা পাবেন।
- পঁচিশ(২৫) বছর বা ততোধিক হলে, আনুতোষিক এর হার ১(এক) টাকার বিপরীতে ২৩০ টাকা পাবেন।