খালাসি পদের পরীক্ষা প্রস্তুতি – খালাসি পদে চাকরি পাবেন ১০৮৬ জন। খালাসি পদে ১০৮৬ জনকে চাকরি দেবে রেলওয়ে। চতুর্থ শ্রেণির এই পদের কর্মচারীরা বেতন পান জাতীয় বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেডে। এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হলেই আবেদন করা যাবে। আবেদনের শেষ সময় ২৬ জানুয়ারি ২০২২। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে খালাসি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রশ্নপদ্ধতি ও প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব খাতভুক্ত চতুর্থ শ্রেণির পদ (স্থায়ী) ‘খালাসি’। পাবনা ও লালমনিরহাট ছাড়া বাকি সব জেলা থেকে এক হাজার ৮৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে এ পদে। এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় পাস হলেই আবেদন করা গেছে।
খালাসি পদের পরীক্ষা সাজেশন ও প্রস্তুতি ২০২২
পরীক্ষা পদ্ধতি
বাংলাদেশ রেলওয়ের খালাসি পদের নিয়োগ পরীক্ষা হবে দুই ধাপে। প্রথমে ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা, সময় ৬০ মিনিট। লিখিত পরীক্ষায় সর্বনিম্ন পাস নম্বর ৫০ শতাংশ অর্থাৎ কমপক্ষে ৩৫ নম্বর পেতে হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর বণ্টন—বাংলায় ২০, ইংরেজিতে ২০, গণিতে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ১৫ নম্বর। প্রতিটি প্রশ্নের মান থাকবে ১ করে। লিখিত পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থীদের ৩০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
দায়িত্ব ও কাজ
বাংলাদেশ সরকারের বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেডে বেতন পান রেলওয়ের খালাসি পদের কর্মচারীরা। চতুর্থ শ্রেণির এ পদের বেতন স্কেল ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা। কাজ বা দায়িত্ব হলো মূলত মালপত্র খালাস বা নামানো ও পরিচ্ছন্নতা। রেল মাধ্যমে আসা মালামাল নামানো, ভিআইপি কোনো ব্যক্তি রেলে যাত্রী হলে তাঁর মালামাল নামানো, ট্রেন থেকে যাত্রী নামলে বগিতে যাত্রীদের ফেলানো উচ্ছিষ্ট ও ময়লা ঝাড়ু দিয়ে ফেলে পরিষ্কার করা, পানি দিয়ে বগি ধোয়া, ইঞ্জিন রুম ও স্টেশন পরিষ্কার রাখা। এর পাশাপাশি রেলের পাতের পাথর এলোমেলো হলে বা সরে গেলে সেগুলোর লেভেল সমান করাও তাদের কাজের আওতাভুক্ত।
পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ
বাংলা : বাংলা বিষয়ে পরীক্ষা হবে দুটি অংশের ওপর—সাহিত্য ও ব্যাকরণ। বাংলার সাহিত্য অংশের জন্য শুরুতে বিগত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ পড়বেন। বিগত সালের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন থেকেই অনেক কমন পাওয়া যায়। এরপর কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জসীমউদ্দীন, শামসুর রাহমান, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ বা কবিতা সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কয়েকটি গল্প, উপন্যাস ও নাটক। বিভিন্ন সাহিত্যিকের ছদ্মনাম ও উপাধি জানা থাকলে পরীক্ষায় ভালো করা সহজ হবে।
বাংলায় ব্যাকরণে যেসব টপিকস থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা তাহলো—এককথায় প্রকাশ বা বাক্য সংকোচন, বাগধারা, কারক-বিভক্তি, সন্ধি, বানান শুদ্ধি, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, শব্দের প্রকারভেদ (কোনটা কোন দেশি শব্দ), সাধু ও চলিত রূপ, সমাস, পদ প্রকরণ, ক্রিয়ার কাল, পরিভাষা, উপসর্গ প্রভৃতি। ব্যাকরণের প্রস্তুতির জন্য দেখতে পারেন মুনীর চৌধুরী রচিত নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বইটি। আর অনুশীলনের জন্য বাজারের ভালো মানের কোনো একটা প্রকাশনীর বই পড়া যেতে পারে। এ পদের চাকরির জন্য আলাদা কোনো বই কেনার প্রয়োজন নেই। বাসায় চাকরির প্রস্তুতি কোনো বই থাকলে সেটা থেকেই আপনি প্রস্তুতি নিতে পারেন, বিশেষ করে প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে দেওয়া বিগত সালের চাকরির প্রশ্ন।
ইংরেজি : ইংরেজি লিটারেচার অংশ থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা তেমন নেই। তবে গ্রামার অংশে গুরুত্ব দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলো— 1. Parts of Speech, 2. Gerund & Participle, 3. Number, 4. Gender, 5. Preposition, 6. Tense, 7. Article, 8. Degree, 9. Tag Question, 10. Translations, 11. Right form of Verb, 12. Voice Change, 13. Narration, 14. Subject-verb Agreement, 15. Conditional Sentence, 16. Synonym & Antonym, 17. Spelling, 18. Changing sentence প্রভৃতি। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির মধ্যে যেকোনো একটি শ্রেণির গ্রামার বই থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন। অথবা, বাজারের ভালো মানের কোনো একটি প্রকাশনীর বই পড়লেই চলবে।
গণিত : গণিতকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়—পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি। তবে পাটিগণিত থেকেই ৯-১০টি প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ অংশ সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গণিতের প্রস্তুতির জন্য চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণির গণিত বই থেকে অনুশীলন করতে পারেন। নিয়মিত বুঝে বুঝে অনুশীলন করে গণিতে ভালো করা সম্ভব। পাটিগণিতের যেসব টপিকস গুরুত্বপূর্ণ—বিভাজ্যতা ও জোড়-বিজোড় সংখ্যা, মৌলিক সংখ্যা, মূলদ-অমূলদ সংখ্যা, বর্গ ও বর্গমূল, সংখ্যা সম্পর্কিত সমস্যা, ভগ্নাংশ, সরলীকরণ, পরিমাপ ও একক, লসাগু ও গসাগু, গড়, অনুপাত-সমানুপাত, ঐকিক নিয়ম, শতকরা, লাভ-ক্ষতি, বীজগণিতীয় সূত্রাবলি, সরলীকরণ ও রাশিমালার মান নির্ণয়, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, বীজগণিতের গসাগু ও লসাগু নির্ণয়, জ্যামিতির প্রাথমিক আলোচনা প্রভৃতি।
সাধারণজ্ঞান : সাধারণ জ্ঞানে প্রস্তুতির জন্য বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়তে হবে। গুরুত্বপূর্ণ টপিক হলো—বাংলার ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, সংবিধান, বাংলাদেশ পরিচিতি, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা—বিশেষ করে রেলওয়ে, বাংলাদেশের সম্পদ, বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, খেলাধুলা প্রভৃতি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, রাজধানী ও মুদ্রা, ভৌগোলিক বৈচিত্র্য (পর্বত, সাগর, প্রণালী, খাল), গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন, চুক্তি, খেলাধুলা প্রভৃতি। সাধারণ জ্ঞানে ভালো প্রস্তুতির জন্য দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত পড়া যেতে পারে। এ ছাড়া বাজারে প্রচলিত সাধারণ জ্ঞানের ভালো মানের একটি গাইড বই পড়া যেতে পারে।
♦ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেতে www.railway.gov.bd ওয়েবসাইটের ‘রেলওয়ে চাকরিবিষয়ক’ বিভাগের ‘নিয়োগসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি’ অংশে ক্লিক করুন।