LGED কার্যসহকারী নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি। LGED কার্যসহকারী নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস ও প্রস্তুতি। সাধারণত ৭০-৮০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। প্রতিটি প্রশ্নের মান সাধারণত ১। প্রশ্নপত্রে নেগেটিভ মার্কিংয়ের ব্যাপারে কিছু লেখা না থাকলে নেগেটিভ মার্কিং হবে না। প্রার্থী বেশি হলে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ৮০টি প্রশ্নে ১০০ নম্বর বরাদ্দ থাকে এবং নেগেটিভ মার্কিং থাকে। পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান (সমসাময়িক ঘটনাবলি, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, কম্পিউটার ইত্যাদি) থেকে প্রশ্ন থাকে। পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন হয় সাধারণত এভাবে—বাংলায় ২০টি, ইংরেজিতে ২০টি, গণিতে ২০টি ও সাধারণ জ্ঞানে ২০টি করে প্রশ্ন।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির পরামর্শ
📖 ইংরেজি : ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্ন আসে গ্রামার ও সাহিত্য অংশ থেকে। তবে বেশির ভাগ প্রশ্ন থাকে গ্রামার অংশ থেকে। বিগত সালের প্রশ্নগুলো থেকে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন আসে Idioms and phrases, Synonyms and antonyms, Appropriate prepositions, Modals & group verbs, Corrections, Participle, Infinitive, Gerund, Subject verb agreement ইত্যাদি থেকে। এ ছাড়া গ্রামারের অনান্য গুরুত্বপূর্ণ টপিক থেকেও প্রশ্ন আসে। প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘণ্টা ইংরেজির জন্য বরাদ্দ রাখতে পারলে প্রস্তুতি ভালো হবে। আর সাহিত্য অংশ থেকে ইংরেজি সাহিত্যের যুগ বিভাগ, কিছু লিটারেরি টার্ম, বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর লেখকদের নাম ও পরিচিতি থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে। সাহিত্য অংশের প্রস্তুতির জন্য আগের বছরগুলোতে আসা বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নগুলো বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এগুলো থেকে কমন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয় থেকেও মাঝেমধ্যে প্রশ্ন আসতে দেখা যায়।
✏️ গণিত : গণিতের ভিত্তিটা মজবুত না হলে পরীক্ষায় ভালো করা কঠিন! প্রতিদিন কমপক্ষে দুই ঘণ্টা গণিতের জন্য বরাদ্দ রাখুন। গণিতের বেসিক জানতে বা দুর্বলতা কাটাতে গণিতবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সহযোগিতা নিতে পারেন। এ ছাড়া ইউটিউবেও খোঁজ করলেই গণিত প্রস্তুতির জন্য ভালো ভালো চ্যানেল পেয়ে যাবেন। ভিডিও পাঠ বা টিউটরিয়াল মন দিয়ে দেখলে কঠিন অঙ্কগুলো আয়ত্তে চলে আসবে! বাজারেও গণিত প্রস্তুতির জন্য ভালো বই পাওয়া যায়। সেগুলোরও সহায়তা নিতে পারেন। গণিতের সূত্রগুলো লিখে পড়ার টেবিলের সামনে টানিয়ে বারবার চোখ বোলালে একসময় মুখস্থ হয়ে যাবে। গণিতের ভিত্তি মজবুত হলে অল্প সময়ে গণিত এমসিকিউর উত্তর বের করার শর্টকাট নিয়ম শেখা যেতে পারে। তবে ভুলেও শুরুতে শর্টকাট নিয়ম শিখবেন না, তাহলে বেসিক নড়বড়ে থেকে যাবে! বিগত বছরগুলোর প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাস্তব সংখ্যা, লসাগু, গসাগু, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভ ও ক্ষতি, কাজ, বীজগাণিতিক সূত্রাবলি, সরল, বহুপদী উৎপাদক, সূচক, লদারিদম, কোণ, ত্রিভুজ—এই টপিকগুলো থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। গণিতে ভালো করতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির একাডেমিক গণিত বইগুলো অনুশীলন করতে হবে।
🖍️বাংলা : বিগত পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে, বাংলা অংশে সাহিত্য ও ব্যাকরণ উভয় অংশ থেকেই প্রশ্ন এসেছে। ব্যাকরণ অংশে ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস, প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, উপসর্গ, ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, বানান ও বাক্যশুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক শব্দ এবং বিপরীতার্থক শব্দ, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, প্রবাদ বাক্য ইত্যাদি থেকে সাধারণত প্রশ্ন আসে। ব্যাকরণ অংশে প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড ব্যাকরণ বইটা ভালো করে পড়া যেতে পারে।
এবার আসি বাংলা সাহিত্যে। এই অংশের প্রস্তুতির জন্য কৌশলী হতে হবে। বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতির শুরুটাই হওয়া উচিত বিগত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন সমাধান করার মাধ্যমে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ওপর প্রায় একই ধরনের প্রশ্ন বারবার আসতে দেখা গেছে এর আগে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প, উপন্যাস ও বিভিন্ন পত্রিকা প্রকাশের সাল এবং সম্পাদকের নামও প্রশ্নে আসে।
এ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, মীর মশাররফ হোসেন, দীনবন্ধু মিত্র, জসীমউদ্দীন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, ফররুখ আহমদ, কায়কোবাদ প্রমুখ কবি-সাহিত্যিক-লেখকের সম্পর্কে সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে। এই বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য বাজার থেকে ভালো মানের একটি সহায়ক বই অনুসরণই যথেষ্ট।
📚 সাধারণ জ্ঞান : সাধারণ জ্ঞানের ওপর কয়েক ধরনের প্রশ্ন আসে। যেমন—মৌলিক সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান। এ ছাড়া সাধারণ জ্ঞান অংশে দৈনন্দিন বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে। সাধারণ জ্ঞানে ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়তে হবে। বাজারের প্রচলিত ভালো মানের একটি গাইড বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো পড়তে হবে।
যেমন—ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের সংবিধান, সরকারব্যবস্থা, জাতীয় সম্পদ, জাতীয় অর্জন, চলতি অর্থ বাজেট, পুরস্কার, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন, বৈশ্বিক চুক্তি, সম্মেলন, নোবেল পুরস্কার (২০২১) বিষয়বস্তুর ওপর ভালো জানাশোনা থাকতে হবে। বিগত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পড়তে পারলে খুব ভালো হয়। এ ছাড়া অডিটর পদ ও দায়িত্বসংশ্লিষ্ট কিছু প্রশ্নও আসে অনেক সময়।
কম্পিউটার অংশে প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিকের কম্পিউটার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। আর দৈনন্দিন বিজ্ঞানের জন্য নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বই থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন। এ ছাড়া পত্রিকায় প্রকাশিত এ ধরনের তথ্যগুলোও মন দিয়ে পড়তে পারেন।
বিসিএস সহ বিগত(২০১৭-২০২২) জব সল্যুশন সমাধান করলে ৬০-৭০% কমন পাবেন।