১৪ থেকে ২০ গ্রেড পদগুলোর চাকরির পরীক্ষায় সবোর্চ্চ নম্বর উঠাতে কিছু করণীয় রয়েছে। তা নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো। পদগুলো হলোঃ ব্যক্তিগত সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেট, অফিস সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ক্যাশিয়ার, হিসাব রক্ষক/হিসাব সহকারী, সাঁট, মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর, সাঁটলিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর।
১৪ থেকে ২০ গ্রেড পদগুলোর চাকরির পরীক্ষা পদ্ধতি আলোচনা ও প্রস্তুতি
১। যে ধরণের প্রশ্ন হয়ে থাকেঃ বর্ণিত পদগুলোতে সাধারণত লিখিত প্রশ্ন হয়ে থাকে এবং কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এমসিকিউ প্রশ্নও হয়ে থাকে তবে মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষগুলোতে লিখিত প্রশ্ন হয়।
২। প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণাঃ প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা পেতে প্রথমেই আপনাকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর এ ২০২১-২০২২ সালে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন গুলো দুই থেকে তিনবার চোখ বোলাতে হবে। তাহলেই কি ধরণের প্রশ্ন আসে সে সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবেন।
১৪ থেকে ২০ গ্রেড পদগুলোর চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতি ও পরীক্ষা পদ্ধতি
৩। প্রস্তুতির প্রথম দুই মাসের পড়াঃ প্রস্তুতির প্রথমেই আপনাকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের পরীক্ষায় আসা লিখিত প্রশ্নগুলো (২০১২ সাল থেকে ২০২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত) সংগ্রহ করতে হবে। সংগৃহীত প্রশ্নগুলো ২৫০-৩০০ সেট হতে পারে।
৪। ২৫০-৩০০ সেট থেকে কত % প্রশ্ন পুনরায় চাকরির পরীক্ষায় আসতে পারেঃ ২৫০-৩০০ সেট থেকে কমপক্ষে ৮০-৮৫% প্রশ্ন পুনরায় চাকরির পরীক্ষায় আসে। অনেক পরীক্ষায় ৯০% এমনকি ১০০%ও রিপিট হয়।
i. ম্যাথ ম্যাক্সিমামই পরীক্ষাতেই ১০০% কমন পড়ে
ii. সাধারণ জ্ঞান রিসেন্ট প্রশ্ন ছাড়া ৯০% ই কমন পাবেন।
iii. বাংলা ৯০% কমন পাবেন (প্রকৃতি ও প্রত্যয়, বাংলা সাহিত্য ছাড়া)।
iv. ইংরেজি লিটারেচার ছাড়া ৯৫% কমন পাবেন (লিটারেচার এর জন্য শুধুমাত্র বিসিএস এর লিটারেচারের বিগত প্রশ্নগুলো পড়লেই হবে)।
৩০০ সেট এর মধ্যে ৮০% কমন আসবে অল্প কিছু পরীক্ষা ছাড়া। ৩০০ সেট ভালো করে ৭-৮ বার রিভিশন দেয়ার পর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন বাকি ২০% কমন পেতে হলে আপনাকে কি কি পড়তে হবে বা কিভাবে পড়তে হবে।
৫। সতর্কতাঃ আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে যারা পড়তে বসবেন তাঁরা উপরে বর্ণিত পদগুলোর পরীক্ষার জন্য লিখিত প্রশ্ন পাবেন এমন বই (ভাল প্রকাশনীর) সংগ্রহ করে শুধু লিখিত প্রশ্নগুলোই পড়তে থাকেন দুই মাস (৩০০ সেট)। মন চাইলেও প্রস্তুতির দুই মাসে অন্য কোন পড়া ধরতে যাবেন না- তাতে আপনার প্রস্তুতিতে সমস্যা হবেই।
প্রতিদিন ৮-১০ সেট করে প্রশ্ন শেষ করুন তাহলে ১ মাসে ৩০০ সেট শেষ করে ২য় মাসে ৩০০ সেট ৩-৪ বার রিভিশন দিন।
৬। সহায়ক বইঃ পড়তে গেলে বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণের অনেক টপিক আছে যেগুলো বুঝতে আপনার সহায়ক বই এর প্রয়োজন হতে পারে- এ ক্ষেত্রে সহায়ক বই হিসেবে বাজারের কিছু ভালো প্রকাশনীর বই এর সাহায্য নিন।
৭। বর্ণিত পদগুলোর পরীক্ষায় আসা প্রশ্নের বিষয়ঃ
বাংলা: এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, সন্ধি, সমাস, কারক, প্রকৃতি ও প্রত্যায়, সাহিত্য (শুধু বই এর লেখকের নাম), অনুবাদ।
ইংরেজি: Preposition, Phrase & Idioms, Correction, Right form of Verbs, Tense, Parts of Speech, Translation, Voice, Transformation of Sentence, Literature.
সাধারণজ্ঞান: ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬ ছয় দফা, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, মেগা প্রকল্প, বিভিন্ন দেশ, রাজধানী ও মুদ্রা, বিভিন্ন দেশের পার্লান্টে ভবনের নাম, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, নদ-নদী, কৃষি, পরিসংখ্যান (জনশুমারি, বাজেট), উপজাতী, ক্রিকেট ও ফুটবল ইত্যাদি।
কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি: শুধুমাত্র বিগত বিসিএস পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন।
ম্যাথ: শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, ঐকিক নিয়ম, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভ-ক্ষতি, মান নির্ণয়, উৎপাদক, সমান্তর ও গুণোত্তর ধারা, ত্রিকোনমিতি, পরিমিতি,
জ্যামিতি: কোন, তৃভুজ, চতুর্ভুজ, রম্বস, কোন, ট্রাপিজিয়াম, আয়তক্ষেত্র।
৮। কম্পিউটার ব্যবহারিক পরীক্ষা: ব্যবহারিক পরীক্ষা সাধারণত লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয় তাদের জন্য। ব্যবহারিক পরীক্ষায় সাধারণত সার্কুলারে যদি aptitude test কথাটি উল্লেখ থাকে তবে কম্পিউটার টাইপিং এর জন্য ২০ মিনিট গতি পরীক্ষা ছাড়াও এক্সেল এ স্যালারি সিট করতে দেয়া হয় বা চিঠি টাইপ করতে দেয়া হয়। যদি aptitude test কথাটি উল্লেখ না থাকে তবে শুধু ২০ মিনিটে কম্পিউটার টাইপিং এর গতি পরীক্ষা নেয়া হয়। তবে ব্যবহারিক পরীক্ষা দেয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অতএব চাকরির পরীক্ষার জন্য লিখিততে সবোর্চ্চ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে তারপর ব্যবহারিক।
৯। মৌখিক পরীক্ষা: ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষার জন্য করণীয়-
i. নিজ জেলা সম্পর্কে ও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, স্থান, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে পড়ে যেতে হবে।
ii. যে বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন সে বিষয়ের ব্রিফ প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়ে যেতে হবে।
iii. ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, মুক্তিযুদ্ধের বিস্তারিত ও রিসেন্ট ঘটনার বিস্তারিত।
iv. মেগা প্রকল্প, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন বই ও অর্জন সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ে যেতে হবে।
v. বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণ পড়ে যেতে হবে।
সবশেষে একটা কথাই বলবো চাকরির প্রস্তুতির জন্য শুধু ৬ টা মাস ডেডিকেট হয়ে পড়াশোনা করুন। দোওয়া করি পরিশ্রমী তাঁর সর্বোচ্চ সাফল্যটা পাক। চাকরির প্রস্তুতি নেয়া সব বেকার ভাই-বোনদের জন্য শুভ কামনা।