অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষা ২০২১। অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ক,খ,গ এই তিনটি বিভাগ কিভাবে লেখা যায়। ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তর উপস্থাপন, লেখার সময়, ও কৌশল। মোট পরীক্ষার মার্ক১০০। ১০০ মার্কের মধ্যে ৪০ পেলে পাশ। অনার্স পরীক্ষা দুটি অংশে বিভক্তঃ ৮০ মার্কের পরীক্ষা হবে। ৩২ পেলে পাশ। ২০ মার্ক ইনকোর্স পরীক্ষা যা আপনার কলেজের হাতে।
৮০ মার্ক পরীক্ষার মানবন্টনঃ
- প্রশ্নের ৩টা ক্যাটাগরি থাকবে।
- ক বিভাগঃ অতি সংক্ষিপ্ত।
- খ বিভাগঃ সংক্ষিপ্ত।
- গ বিভাগঃ বর্ণনামুলক বা রচনামূক।
- পরীক্ষার সময় ৪ ঘন্টা।
- ক বিভাগে ১২টা থাকবে, ১০টার উত্তর দিতে হবে।প্রতি প্রশ্নের মান ১।
▶মার্ক ১×১০=১০
- খ বিভাগে ৮টা প্রশ্ন থাকবে ৫ টির উত্তর দিতে হবে। প্রতি প্রশ্নের মান ৪।
▶মার্ক ৫ ×৪=২০
- গ বিভাগে ৮টা প্রশ্ন থাকবে ৫টা দিতে হবে।প্রতি প্রশ্নের মান ১০
▶মার্ক ৫ ×১০=৫০
- মোট লিখিত মার্ক ১০+২০+৫০=৮০+ ইনকোর্স ২০=১০০।
অনার্স ১ম বর্ষের রুটিনের পিডিএফ ফাইলঃ অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষার সময়সূচী.pdf
এইবার আলোচনায় আসি পরীক্ষার খাতায় কিভাবে লেখা উপস্থাপন করা যায়।
যেভাবে ক বিভাগের অতি সংক্ষিপ্ত লিখবেনঃ
অতি সংক্ষিপ্ত অর্থ এক কথায় উত্তর দাও।
প্রশ্ন যা চাবে তাই দিবেন।
উদাহরনঃ মনোবিজ্ঞান কি ?
উত্তরঃ মনোবিজ্ঞান হলো আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞান।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বারোটি থাকবে তার মধ্যে দশটি উত্তর দিতে হবে।
খ বিভাগের সংক্ষিপ্ত যেভাবে লিখবেনঃ
খ-বিভাগ যে আঙ্গিকে প্রশ্ন সাজানো থাকে। সাধারণত খ বিভাগ প্রশ্নে সংজ্ঞা লেখ, বুঝিয়ে লেখ, কী , কেন , কীভাবে ,কাকে বলে ,সংক্ষেপে লেখ ইত্যাদি।
যেমন প্রশ্নের ক্যাটাগরি আছে তেমন উত্তরের ক্যাটাগরি আছে।
যদি কাকে বলে ,কী বা সংজ্ঞা টাইপের প্রশ্ন আসে তাহলে-
শুরুতে ভূমিকা লিখতে হবে এবং বাধ্যতামূলক লিখতে হবে। ভূমিকা হবে একদম চমৎকার। যাতে টিচার দেখে খুব সহজেই বুঝতে পারে। যে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন যা উল্লেখ থাকবে এর উত্তর সুন্দরভাবে লিখতে হবে। এরপর উপসংহার লিখে শেষ করবেন। আপনি যদি ভূমিকা উপসংহার না লিখেন তাহলে ফুল মার্ক কখন পাবেন না। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন কত পেজ লিখলে ভালো হবে বা কত পেজ লিখবেন? এই ধরনের প্রশ্ন আপনি কম করে হলেও দুটি পেজ লিখবেন। বেশি লিখলে সমস্যা নাই। একটি কথা মনে রাখবেন পরীক্ষার সময়,সময় নষ্ট না করে সঠিক উত্তরটা লেখাটাই বেটার।
সকল কলেজের কেন্দ্র তালিকাঃ https://campustimesbd.com/archives/2842
গ বিভাগের রচনামূলক প্রশ্নের উত্তর যেভাবে লিখবেনঃ
বর্ণনামূলকের ক্ষেত্রে ভূমিকা উপসংহার তো থাকবেই মাঝে মূল কথা লিখতে হবে। মূল কথাতে যদি পয়েন্ট থাকে তবে প্যারা আকারে লিখা যাবে।সব পয়েন্টের নাম্বারিং হবে। নাম্বারিং (ক) বা (১) এর ধারায় দিবেন। পয়েন্টের নিচে আন্ডারলাইন থাকবে। কোনা কালার পেন ব্যবহার করে সময় নষ্ট করবেন না।
মাথায় রাখবেন মার্ক কিন্তু দশ। আপনি যতই ভালো লিখেন ১০ এ ১০ আপনাক দিবেনা। সর্বোচ্চ ৯ বা ৮।
আপনার ভালো রেজাল্টের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা এই বিভাগের। এই বিভাগে আপনার নুন্যতম ৩টা প্রশ্ন কমন রাখতে হবে এবং উত্তর সুন্দর ভাবে লিখতে হবে নয়তো রেজাল্ট ভালোবাসবে না। এই বিভাগকে বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা , ভূমিকা, প্রভাব, ইত্যাদি টাইপ প্রশ্ন থাকে। অনেক সময় দুই পার্টও থাকে।
যেমনঃ মনোবিজ্ঞান কি?এবং মনোবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু আলোচনা করো? এই বিভাগের ভূমিকা ১টু বড় রাখলে ভালো হয়। পাগলের মত শুধু লিখেই যাবেন তাহলে লাভ নাই।
প্রশ্ন লেখার আগে বুঝবেন যে এই প্রশ্ন কত পয়েন্ট আছে ! যদি পয়েন্ট কম থাকে তবে আপনার পয়েন্টের সাইজ বড় হবে। আর পয়েন্ট অনেক থাকলে পয়েন্টের সাইজ ছোট হবে পয়েন্ট বেশি হবে। ১ম এর দিকের পয়েন্ট গুলা যাতে বই রিলেটেড থাকে। তবে প্রমাণ মূলক প্রশ্নে বানাতে তো পাবেন না। তাই যা উত্তর তাই দিতে হবে। ১ পৃষ্ঠায় ২টার বেশি পয়েন্ট রাখবেন না শুরুর দিকে।
১টা প্রশ্নে ভূমিকা উপসংহার বাদে কম করে ৮ থেকে ১০টা পয়েন্ট রাখবেন। বেশি রাখলে আপনার লাভ।
বর্ণনামূলক প্রশ্নের আট থেকে দশ পেজ লিখলে ভালো হয় কম-বেশি করতে পারেন। আপনার ৫টা কমন থাকলে কথাই নাই।তবে ৩টা কমন লাগবে।যাতে খাতা দেখার সময় স্যার মনে করে স্টুডেন্ট ভালো। লেখার সাইজ মাঝারি থাকবে।লেখা বাজে থাকুক তবুও যাতে বুঝা যায়. .ধরা যায়।
এখন টাইম মেইনটেন্স ! কোন বিভাগ কত সময় নিব?
১টা প্রশ্নে কত টাইম লাগবে?
সময় নিয়ে আলোচনার আগে কিছু কথা-
পরীক্ষার কেন্দ্রে ১ঘন্টা আগে যাবেন।
১৫ মিনিট আগে খাতা দিবে।
রুমে প্রবেশের আগে জল যোগ ও বিষর্জন শেষ করে ঢুকবেন। পারলে লগে পানির বোতল রাখবেন।
- আপনাকে যে খাতা দেয়া হবে তাতে ১৩টা পাতা থাকবে।
- ২৬টা পৃষ্ঠাতে মার্জিন দিবেন।
- বৃত্ত ভরাট, লেখা ও মার্জিন দিতে ১৫ মিনিট চলে যাবে।
অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার সময় বিভাজনঃ
- নির্ধারিত সময় ৪ ঘন্টা।
- ক বিভাগ অতি সংক্ষিপ্ত ১০ মার্কের উত্তর ও প্রশ্ন হাতে পেয়ে পড়া ২০ মিনিট।
- যেটা কমন পরবে লিখে দিবেন। যেটা পরবেনা সেটা ফাঁকা রেখে এগিয়ে যান।
- খ বিভাগ সংক্ষিপ্ত ৪ মার্কের প্রতি প্রশ্নের উত্তর ১৫ মিনিটে শেষ করতে চেষ্টা করবেন। তবে বেশিও লাগবে । ৮০ মিনিটে এই বিভাগ ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন।
- গ বিভাগ রচনা মূলক ১০ মার্কের উত্তর ২৫ মিনিট লাগাবেন। একটু কম বেশি হবেই। ১টা প্রশ্নে সময় বেশি লাগলে পরের টা কভার দিতে চেষ্টা করবেন। নাহলে চরম ধরা খাবেন। বেশি পেচাতে যাবেন না। পেচালেই ধরা খাবেন। সময় গড়ে নিবেন ১৩০ মিনিট।১০মিনিট অপচয়।
এই টার্গেট বা আপনার তৈরি করা টার্গেট মাথায় সেট রাখবেন। লক্ষ ভেদ করবে না তবে লক্ষ্যের পাশে লাগবে।
পরীক্ষার খাতায় বিভাগ লেখার ধারাবাহিকতাঃ
ক , খ ও গ বিভাগ ধারাবাহিক ভাবেই লিখতে হবে এমন ধরাবাধা নিয়ম নাই।
- আদর্শ ধারাবাহিকতা
- প্রথমে ক বিভাগ
- তারপর গ বিভাগ
- তারপর খ বিভাগ
কারন খ বিভাগে ২০ মার্কের জন্য মাথা নষ্ট করে লাভ নাই।
আপনি গ বিভাগ টেনেটুনে ৫ টাই লিখে আসবেন। তারপর খ বিভাগে দিবেন। দেখবেন যাতে খাতা না ছিড়ে যায়। প্রশ্নের উপরে লিখা থাকে প্রত্যেক বিভাগে ধারাবাহিক ভাবে লিখতে হবে।
অর্থ হচ্ছে. . আপনি ক বিভাগ শুরু করছেন ওটা শেষ করে অন্য বিভাগে যাবেন। এটার দুটা লেখে পরে ওটার দুটা লিখবেন তা হবে না। আপনি বিভাগের ভিতরে এলোমেলো করতে পারেন ।২ লিখে ৫ তারপর ১ এভাবে লিখতে পারেন। যাস্ট বিভগা ছন্নছারা করা যাবেনা ।
৬০ তুলতে হলে যে হিসাব মাথায় রাখবেনঃ
- ক বিভাগে ১০ এ ১০
- গ বিভাগে জাতের কমন ৩টা প্রশ্নে গড়ে ৭ করে ২১।বাকী দুটাতে ধরেন ৭। ২১+৭= ২৮
- খ বিভাগে যদি সংজ্ঞা টাইপ প্রশ্ন থাকে আর কারেক্ট লেখতে পারেন তবে ৩ দিবে। ৫ টা প্রশ্নে গড়ে ১২।
আমি একদম কম করে ধরেছি। আপনার উত্তরের মান ভালো হলে আপনাকে বেশি দিবে । এটা আপনি ধরে রাখবেন – আশা রাখবেন। ১০+২৮+১২=৫০+ ইনকোর্সে নুন্যতম ১০=৬০= ৩.০০।
আপনার জ্ঞাতার্থেঃ সম্পূর্ণ বিশ্লেষণে হয়তো কিছু ভুল থাকতে পারে ভুলকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আর চাইলে আপনার ইচ্ছা মত লিখতে পারবেন। এখানে শুধুমাত্র ধারণা দেওয়া হয়েছে। শেয়ার করে রাখতে পারেন। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আমাদের ফরমে থাকুন।